প্রত্যয় ডেস্ক: করোনার জেরে এ বার বিশ্বের বৃহত্তম ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলা ডিজিটাল হওয়ার পথে। মেলা প্রাঙ্গণে যে বইয়ের প্রদর্শনী হয়, তার বদলে এ বার প্রকাশকেরা ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশনার সম্ভার দেখানোর সুযোগ পাবেন। এর সঙ্গে প্রথাগত কিছু অনুষ্ঠান বিধি মেনে করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলা কর্তৃপক্ষ।
ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলার বরাবর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ মঙ্গলবার উদ্বোধন হয়, চলে বুধ থেকে রবিবার পর্যন্ত। এ বছর তা হবে ১৪ থেকে ১৮ অক্টোবর। এই বইমেলা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বইমেলার পাশাপাশি বইয়ের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য মেলাও।
কিন্তু এই মেলায় পাঠকেরা বই কিনতে পারেন না। বিক্রি হয় বইয়ের স্বত্ব। প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ এই মেলা। ১৯৪৯ সালে এই মেলাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয় জার্মান প্রকাশক সমিতি। জার্মান পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারপার্সন কারিন শ্মিট-ফ্রিডরিখস বলেন, ‘‘এই বইমেলা শুধুমাত্র পৃথিবীর বৃহত্তম বইমেলা নয়। প্রাণবন্ত এই মেলা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অন সাইট প্রদর্শনী বন্ধ রাখতে আমরা বাধ্য হচ্ছি। তবে এই মেলার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন অনুষ্ঠান কিছুটা হলেও হবে।’’
এ বার সিদ্ধান্ত হয়েছে, অংশগ্রহণে ইচ্ছুক প্রকাশক বা প্রকাশনায় যুক্ত অন্যরা অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করবেন। প্রতিটি প্রকাশকের প্রোফাইল তৈরি করা হবে। তাতে থাকতে হবে প্রকাশনের লোগো এবং প্রকাশনার ওয়েবসাইটের লিঙ্ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রোফাইল থাকলে তারও লিঙ্ক-সহ অন্যান্য তথ্য দিতে হবে।
ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার অধিকর্তা ইউর্গেন বুস জানালেন, তাঁরা সব থেকে গুরুত্ব দিচ্ছেন ডিজিটাল মোডে মেলা সংগঠিত করার। তাঁর কথায়, ‘‘যা আগে কখনও ভাবাই যেত না। এখন তাই করতে হচ্ছে।’’ মেলার অধিকাংশ আলোচনাসভা অনলাইনে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি অবশ্য আশাবাদী। তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থাগুলোর কাছে এ বার মেলার মাধ্যমে ডিজিটালি আরও নানা পথ খুলে যাবে। এ ছাড়া, অনলাইনেও অনেক বেশি বইয়ের সন্ধান মিলবে। ওয়েবিনারে বিশ্বের বিশিষ্ট সাহিত্যিকদের বক্তব্য শোনা যাবে।
এই মেলায় ‘গেস্ট অব অনার’ কানাডা। সে দেশের সাহিত্যের ওপর আলোকপাত করা হবে। সেই দেশের প্রতিনিধিরা ভার্চুয়ালি বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিবেশন করবেন।
করোনাকালে মানুষ যখন মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত, ফ্রাঙ্কফুর্ট মেলা কর্তৃপক্ষ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে চালু করছেন ‘সিগন্যাল অব হোপ’। দুঃসময় কেটে গিয়ে আবার আশার আলো দেখা যাবে, এমনই থিমে শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীতের বিভিন্ন অনুষ্ঠান হবে। লেখা হবে আশাবাদ নিয়ে স্লোগান।